Search
Close this search box.

৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হারানোর শঙ্কা

মিজান চৌধুরী

প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশে বছরে ২৫-৩০ শতাংশ কৃষি এবং খাদ্য পণ্য নষ্ট হচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজের হিসাবে নষ্ট হওয়া পণ্যের মোট ক্ষতির অংক ৫ হাজার কোটি টাকা। বিগত ৫০ বছরে হিসাবটি যোগ করলে এ ক্ষতির অংক সম্ভাব্য দুই থেকে আড়াই লাখ কোটি টাকা। যা চলতি জিডিপির সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এই বিপুল অংক দেশের মূল অর্থনীতিতে যোগ হয়নি।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতায় আটকে আছে কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের বিকাশ।এরমধ্যে নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে গ্যাস ও বিদ্যুৎ মিলছে না। অধিকাংশ স্থানে কাঁচামালের প্রাপ্যতা ও সরবরাহের অনিশ্চয়তা।এ ছাড়া উদ্ভাবন, গবেষণা, মান উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ, পরীক্ষাগার স্থাপন, সংরক্ষণ এবং প্যাকেজিং ব্যবস্থা উন্নয়নে জোরদার নেই। স্থানীয় পর্যায়ে অনেক পণ্য উৎপাদন হলেও প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে অগ্রাধিকার পাচ্ছে না।পণ্য উৎপাদনশীলতা সংক্রান্ত  ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনবল এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তি অনুসরণের অভাব রয়েছে।

আরও দেখা গেছে, সংরক্ষণ সুবিধা স্বল্পতা, ব্যবসার তথ্য ও বিপণন প্রবেশাধিকার সীমিত সুবিধা, অধিক পরিচালন ব্যয় এবং ব্যবসাবান্ধব শুল্ক সুবিধার অভাবও রয়েছে। ফলে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভরতার অভাবে প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে পণ্যে ভ্যালু অ্যাড (মূল্য সংযোজন) কম হচ্ছে। চাহিদা স্বত্বেও রপ্তানি বাজার বাড়ছে না।

এসব প্রতিবন্ধকতা দূর না করা হলে ২০২৮ সালের মধ্যে এ খাতে ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হাতছাড়া হওয়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের নথিপত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারলে ২০২৮ সালের মধ্যে কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের মাধ্যমে অতিরিক্ত সাড়ে চার লাখ কোটি টাকা জিডিপিতে যোগ করা সম্ভব। বর্তমান জিডিপিতে এ শিল্পের অবদান ৯৬ হাজার কোটি টাকার ঘরে আটকে আছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, পরিবহণ, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ এবং উৎপাদন পর্যায়ে নানাভাবে বছরে আম নষ্ট হচ্ছে ২৫-৩০ শতাংশ, কাঠাল ৪৫ শতাংশ এবং সবজি হচ্ছে ৩০ শতাংশ। রপ্তানির চাহিদা এক লাখ মেট্রিক টনের বেশি হলেও বর্তমানে ৩ হাজার মেট্রিক টনের বেশি আম রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। সঠিক স্থানে প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে উঠলে এই নষ্ট হওয়া পণ্যের পরিমাণ আরও কম হতো এবং রপ্তানি বাড়ানো যেত।

খোজ নিয়ে জানা গেছে, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। ভারতের কেরালায় আনারস ‘মরিশাস’ জাতটি জিআই প্রডাক্ট হিসেবে রাজ্য সরকার কর্তৃক স্বীকৃত। এ আনারসকে কেন্দ্র করে বহু ক্ষুদ্র প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা গড়ে উঠেছে। প্রাথমিকভাবে আনারস থেকে প্রায় ১৫ রকমের ভ্যালু অ্যাডেড খাদ্যপণ্য তৈরি হচ্ছে। তার মধ্যে ফ্রেশকাট পাইনঅ্যাপল, ড্রাইড পাইনঅ্যাপল, আনারসের জ্যাম, জেলি, জুস, সফট ক্যান্ডি, আনারসের চাঙ্ক, পাল্প ইত্যাদি উল্লে­খযোগ্য। এছাড়া কেরালার ভার্জিন নারকেল তেল, নারকেল পাউডার ও নারকেলের উপজাত থেকে তৈরি নানা রকমের শোপিস পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়ে। এসবের অর্থনৈতিক ভ্যালুও অনেক। সেখানে কলা থেকে তৈরি নানা রকম চিপসও দেদারছে বিক্রি হয় রাস্তার ভালোমানের দোকানগুলোয়। একইভাবে ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিতে ফুটপাথের দোকানে সুন্দর রেপিং করা মোড়কে বিভিন্ন ফলের ফ্রেশকাট বিক্রি করতে দেখা যায়। যা বেশ লোভনীয়। 

বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে গত ২৮ এপ্রিল নিজ কার্যালয় বসে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ (বর্তমান সাবেক) যুগান্তরকে বলেন, দেশে এখনো পর্যন্ত বড় কোনো প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গড়ে উঠেনি। আনারস ও আম প্রচুর উৎপাদন হলেও প্রক্রিয়াজাত করা যাচ্ছে না। তিনি মনে করেন, কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনে গবেষণা দরকার। এ জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। 

কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের অবস্থা জানতে গত ৭ জুলাই সরেজমিন পরিদর্শন করা হয় রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গা। রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ সূত্রমতে, স্থানীয়ভাবে বছরে টমেটো বেচাকেনা হয় ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা এবং পান ১৫৬১ কোটি টাকা। চলতি মৌসুমে ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমির গাছে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৫ টন। গত বছর প্রায় একশ কোটি টাকার আম বিক্রি হয়েছে। 

রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, এখানে আমসহ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে উঠলে স্থানীয় কৃষকেরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি এই অঞ্চলে কর্মসংস্থান বাড়বে।

কথা হয় রাজশাহীর পবা থানার নওহাটি গ্রামের কৃষক ফিরোজ আহমেদের সঙ্গে। তিনি ২০২৪ সালে কয়েকটি বাগানে আম উৎপাদন করলেও কম মূল্যে বিক্রি করছেন। কোনো ধরনের রপ্তানির সুবিধা পাচ্ছেন না। প্রক্রিয়াকরণ শিল্প প্রসঙ্গে তিনি জানান, সেখানে আম থেকে জুস তৈরির একটি কোম্পানি গড়ে উঠলেও ‘গুটি’ নামে নিম্নমানের আম দিয়ে তৈরি হচ্ছে, ভালো গুণাবলীর আম ব্যবহার করছে না। তার মতে, উৎপাদিত অনেক পণ্য নষ্ট হচ্ছে সঠিক সংরক্ষণ ও পরিবহণের অভাবে।

জাতি সংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশস্থ প্রতিনিধি জিয়াও কুন শি গত জুন মাসে চাপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের কান্দবোনা গ্রামের বাগান পরিদর্শন করে বলেন, আম ভ্যালু চেইন (মূল্য সংযোজন) প্রোডাক্ট। এ সুবিধা নিতে হলে উৎপাদন পর্যায়ে কৃষককে ‘উত্তম কৃষিচর্চা (গ্যাপ)’ অনুসরণ করতে হবে। তাহলে বিভিন্ন দেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়বে। 

একই স্থানে পরিদর্শনকালে সিঙ্গাপুরের ঢাকাস্থ চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স শিলা পিললাই বলেন, ভারতের আম সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে বেশি দামে। সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো গুণাবলীর আম মিললে বাংলাদেশ কেন নয়। যেহেতু সিঙ্গাপুর আম উৎপাদন করে না, সেক্ষেত্রে এ সুযোগ বাংলাদেশ নিতে পারে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং এফবিসিসিআইয়ের ‘কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য’ খাতের সম্ভাবনা সংক্রান্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০২২ সালের বৈশ্বিক বাজার ছিল ১৩ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। সে হিসাবে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার (দেশীয় চাহিদা ও রপ্তানি) ছিল ৪৮০ কোটি ডলার। এছাড়া ভিয়েতনাম ও ভারত এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা সম্ভব হলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বিজ্ঞানীরা কাঠাল থেকেই প্রায় ২০ রকমের ভ্যালু অ্যাডেড খাদ্যপণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। কিছু কিছু সুপার শপে তা বিক্রি হতে দেখা যায়। চাহিদাও বেশ লক্ষণীয়। এছাড়া মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম থেকেও অনেক ভ্যালু অ্যাডেড খাদ্যপণ্য তৈরি হচ্ছে। তবে সেটি সীমিত পরিসরে। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ খাত পূর্ণ বিকাশের জন্য অবকাঠামোগত সক্ষমতা বাড়ানো ও নীতিগত সহায়তার প্রয়োজন। এছাড়া নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তোলা, দেশি-বিদেশি বাজার সম্পসারণ ও রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ, প্রতি জেলায় পণ্যভিত্তিক উৎপাদন, কৃষকের সঙ্গে উৎপাদকের সংযোগ স্থাপন ও সমন্বয় সাধন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে আধুনিক প্যাকেজিং ব্যবস্থার জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন দরকার।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জামাল উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, বেসরকারি খাত কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। এতে আমাদের পণ্যের মূল্য সংযোজন বাড়বে, রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ এবং মানুষও প্রক্রিয়াজাত পণ্যসামগ্রী খাবারের তালিকায় যুক্ত করবে। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে উৎপাদনকেন্দ্রিক প্রকল্প হচ্ছে ৯৫ শতাংশ। আর মাত্র ৫ শতাংশ প্রকল্প হচ্ছে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকেন্দ্রিক।কিন্তু কৃষক উৎপাদন সম্পর্কে জানেন। এখন দরকার প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পের সংখ্যা বাড়ানো।

মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের ফলে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের অভ্যন্তরীণ চাহিদাও বাড়ছে ক্রমান্বয়ে। বর্তমানে দেশে প্রায় ৬৮২ লাখ টন প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য উৎপাদন এবং ১৪০ দেশে এসব খাবার রপ্তানি হচ্ছে। রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ১৭০ লাখ টন। দেশে ৬০০ শিল্প রয়েছে ফুড প্রসেসিংয়ের।এরমধ্যে তিনশ শিল্প রপ্তানি করছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ৭ লাখ লোকের। বাংলাদেশে ২০১৮ সালে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের অভ্যন্তরীণ আকার ছিল ৫.২ বিলিয়ন ডলার, যা বর্তমান বছরে ৭.৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে বলে বিশেজ্ঞরা মনে করছেন। 

জানতে চাইলে ‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসিং অ্যাসোসিয়েশনের (বিএপিএ) প্রেসিডেন্ট মো. আবুল হাসেম যুগান্তরকে বলেন, সম্ভাব্য খাত থাকলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ পাওয়া যাচ্ছে না। এ দুটি নতুন শিল্পের জন্য বড় অন্তরায়। এছাড়া বিদ্যমান প্রসেসিং শিল্পগুলো প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলা করছে। এছাড়াও এলসিতে ডলার সংকট এবং এ শিল্পের কাঁচামাল চিনির অত্যাধিক মূল্য বড় ধরনের অন্তরায়। এতে এ শিল্পের রপ্তানি আয়ে আঘাত আনছে। ২৫০ দেশে এ শিল্পের পণ্য রপ্তানি হলেও সরকার প্রণোদনা ২০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনছে। এতে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে টিকে থাকা যাচ্ছে না। এর ফলে আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে এ শিল্পের রপ্তানি আয় একশ কোটি মার্কিন ডলার থেকে তিনশ কোটি ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা হুমকির মধ্যে পড়েছে।

নীতিমালা ঘোষণা:

সূত্র মতে, আগামী ২০২৮ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং এক লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে ‘কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২৩’ প্রণয়ন করে শিল্প মন্ত্রণালয়। গত বছর ১১ নভেম্বর এই নীতিমালার গেজেট জারি করা হয়। ওই নীতিমালার আওতায় কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনে মূলধনী যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক এবং বিদ্যমান প্রকল্পের লভাংশের ওপর আয়কর মওকুফ, বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরবর্তী তিনবছর পর্যন্ত নগদ প্রণোদনা এবং নমনীয় ব্যাংক ব্যবস্থার ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া অটোমেশন বিনিয়োগে করপোরেট আয়কর শতভাগ অব্যাহতি দেওয়া হবে যদি দেশজ সংযোগ মূল্য মোট অটোমেশনের সংযোগ মূল্যের কমপক্ষে ৩০ শতাংশ পৌঁছায়।

এ শিল্প রক্ষায় বিদেশ থেকে কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য আমদানিতে উচ্চহারে ট্যারিফ আরোপ এবং নির্দিষ্ট কাঁচামাল আমদানিতে ভ্যাট সমন্বয়ের সুযোগ দেওয়া হবে। নতুন শিল্প স্থাপনে প্রকল্প ব্যয়ের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ বা ৫০ কোটি টাকা পর্যন্ত স্বল্প সুদে মূলধন সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়া মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনে ৫ বছর পর্যন্ত ১০০ শতাংশ ভ্যাট, মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে ৭ বছর পর্যন্ত ৭৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বড় শিল্পের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দেওয়া হবে।এছাড়াও মাঝারি ও বড় শিল্পের বিনিয়োগের একশ শতাংশ পর্যন্ত মূলধন সমন্বয় করা হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি ব্যবসা ও বিপণন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম যুগান্তরকে বলেন, কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার এবং কৃষিপণ্যের ভালো জাতের অভাব রয়েছে। এছাড়া ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট প্রাপ্তিতে জটিলতা ও দুর্বল প্যাকেজিং রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে উত্তম কৃষি চর্চা (জিএপি) ও উত্তম উৎপাদন চর্চা (জিএমপি) বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে। পণ্যের মান ঠিক রাখতে দেশে পণ্যের শনাক্তকরণ (ট্রেসিবল) পদ্ধতির উন্নতি ঘটাতে হবে। কৃষিপণ্য রপ্তানি উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *